ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২ | E Passport BD
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২ - বিদেশে ভ্রমণ করার জন্য আপনার প্রয়োজন পড়ে পাসপোর্ট এর পাসপোর্ট হল আপনার নিজস্ব একটি পরিচয় এতে আপনার নাম ঠিকানা , বয়স এবং আপনার নিজস্ব চিহ্ন এখানে থেকে থাকে ।
এক কথায় বলা চলে যদি আপনি এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে । আজকে কথা বলব কি পাসপোর্ট নিয়ে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল প্লাটফর্মে ই পাসপোর্ট সেবা চালু করেছে ।
এই পাসপোর্টে কিভাবে আসলে আপনি তৈরি করবেন সেই সকল নিয়ম আমি নিচে তুলে ধরছি তবে এই নিয়ম গুলি মূলত বাংলাদেশ সরকারের যে ই-পাসপোর্ট অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এর ওয়েবসাইট রয়েছে সেখান থেকেই এই তথ্যগুলো নেওয়া হয়েছে ।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২
১. প্রথমেই বলি এই পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য আপনি ফরম দুই ভাবে পূরণ করতে পারেন । একটি হলো অনলাইনে আর অন্যটি হলো অনলাইন থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করে সেটি প্রিন্ট করে সেই ফরমটি পূরণ করতে পারেন ।
২. তবে অবশ্যই ই পাসপোর্ট করার সময় আপনার কোন কাগজপত্রের সত্যায়ন করার প্রয়োজন পড়ে না ।
৩. ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে আপনার ছবি সংযোজন অথবা সত্যায়িত করার দরকার হবে না।
৪. আপনার যে এনআইডি কার্ড রয়েছে বাংলাদেশ গভারমেন্ট থেকে দেওয়া সেই কার্ড অনুসারে অথবা আপনার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন অনুসারে আপনি ফরমটি পূরণ করবেন ।
৫. তবে এখানে একটা কথা হল যদি আপনার বয়স 18 বছরের নিচে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পিতা-মাতার যে ভোটার আইডি রয়েছে সেই আইডি নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে ।
৬. আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে যেই বয়স থাকবে সেই বয়স সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে ওই ফর্মে।
৭. 18 বছরের নিচে হলে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন সনদ আপনাকে দিতে হবে ।
৮. আপনার বয়স যদি 18 থেকে 20 বছরের ভেতর হয়ে থাকে তাহলে আপনি ভোটার আইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন এর যেকোনো একটি করতে পারবেন।
৯.আপনার বয়স যদি 20 বছরের উপরে হয় তাহলে অবশ্যই আপনার ভোটার আইডি লাগবে এবং এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল আপনি যদি বিদেশে থেকে থাকেন তাহলে আপনার জন্ম নিবন্ধন দিয়ে কাজ করতে পারবেন
১০. আপনার আবেদন ফরমে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট অফিসের ঠিকানা দাখিল করতে হবে।
১১.18 বছরের নিচের বয়সের এবং 65 বছরের উর্ধ্বে যাদের বয়স হয়েছে তাদের পাসপোর্ট এর মেয়াদ হবে পাঁচ বছরের এবং 48 পৃষ্ঠার।
১২. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আপনার বিবাহের নিকাহনামা অথবা তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
১৩. আপনি যদি অতি দ্রুত পাসপোর্ট করতে চান সে ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য নিজ উদ্যোগে ক্লিয়ারেন্স সনদপত্র সংগ্রহ করে আবেদনপত্রের সাথে দাখিল করতে হবে ।
১৪.দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্টের জন্য যদি আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং আপনার সকল তথ্য যদি সঠিক থাকে তাহলে আপনি 15 দিনের ভিতরে আপনার পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
১৫.আবেদনের সময় আপনার মূল জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এবং সরকারি আদেশ মোতাবেক যেসকল কাগজ লাগবে সেগুলো প্রদান করতে হবে।
১৬. ছয় বছরের নিচের শিশুদের জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই তার পাসপোর্ট সাইজের ছবি দাখিল করতে হবে।
১৭. আপনার পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে খুব দ্রুত ভাবে নিকটস্থ থানায় গিয়ে জানাতে হবে এবং নতুন পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে পুরাতন পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং জিটি সহ আবেদন দাখিল করতে হবে।
ই পাসপোর্ট আবেদনের নিয়ম সম্পূর্ণভাবে জানার জন্য নিচের এই লিঙ্কটি ব্যবহার করুন। এই লিংকটি মূলত বাংলাদেশ সরকারের ই পাসপোর্ট অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এর লিংক বিস্তারিত সেখানে গিয়ে আপনারা আরো ভালোভাবে পড়ে নিতে পারেন।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট এর আবেদন কিভাবে করবেন
এবার আপনাদের সাথে শেয়ার করব অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে আপনারা ই পাসপোর্ট এর আবেদন করবেন ।
অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথমত এই লিংকে ক্লিক করুন।
এরপর নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন এবং এখান থেকে আপনার জেলা সিলেক্ট করে দিন ।
এরপর আপনার নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন সেটিকে সিলেক্ট করে দিন।
এরপর কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর দ্বিতীয় পেজে যখন আপনি আসবেন সেখানে আপনার একটি ইমেইল দিতে বলবে তো আপনি আপনার ইমেইল টি দিয়ে কন্টিনুয়ে বাটনে ক্লিক করবেন।
দ্বিতীয় নাম্বার পেজে আসলে আপনার ইমেইল এর নিচে পাসওয়ার্ড সেট করতে বলবে তো এখানে দুটি ঘর থাকবে সেই ঘর দুটিতে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন তো অবশ্যই পাসওয়ার্ডটি আপনি আপনার নিজের মন মত করে নিবেন ।
এরপর আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন দিতে বলবে তো সেখানে আপনি আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন দিবেন । অবশ্যই সেটি ভোটার আইডি অনুসারে অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এর অনুসারে সঠিকভাবে তথ্যগুলো দিয়ে ঘরগুলো পূরণ করুন ।
এরপর আপনি যেই মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করেন সেই মোবাইল নাম্বারটি মোবাইল নাম্বারের ঘরে পূরণ করে ক্রিয়েট একাউন্ট এ ক্লিক করুন। ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার অ্যাকাউন্টটি অ্যাক্টিভ করার জন্য আপনার ইমেইলে একটি মেইল চলে যাবে।
আপনার ইমেইল ওপেন করে সেখানে ই-পাসপোর্ট থেকে যে মেইলটি গেছে সেই মেইল টি ওপেন করে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টটি এক্টিভ করে নিবেন ।
এরপর আপনি পুনরায় আপনার ই-পাসপোর্ট অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এর যে সাইটে রয়েছে সেই সাইটে গিয়ে আপনার ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে জিমেইল পাসওয়ার্ড আপনি একাউন্ট তৈরীর সময় ব্যবহার করেছিলেন সেগুলো সঠিকভাবে দিয়ে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ।
এরপর আপনার সামনে একটি ফরম চলে আসবে সেই ফর্মে আপনি আপনার ভোটার আইডি অথবা অনলাইন এনআইডি তথ্য অনুসারে আপনার সকল তথ্য গুলি দিয়ে ফরমটি পূরণ করুন ।
এরপর আপনার সামনে যেই পেজটি চলে আসবে সেখানে দেখবেন আপনার প্রিভিয়াস কোন পাসপোর্ট হয়েছে কিনা অর্থাৎ পূর্বে আপনি কোন পাসপোর্ট করেছেন কিনা সেই অপশনগুলি চলে আসবে।
আপনি যদি করে না থাকেন তাহলে আপনার কোন পাসপোর্ট নেই এই অপশনটি সিলেক্ট করে দিন এবং সেভ এন্ড কন্টিনিউ দিয়ে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন ।
এরপর যেই পেজটির চলে আসবে সেখানে আপনার ঠিকানা সঠিকভাবে দিতে হবে তো অবশ্যই ভোটার আইডি অথবা জন্ম নিবন্ধনের তথ্য অনুসারে সেই পেজটি পূরণ করবেন।
পার্মানেন্ট এড্রেস যদি একই হয়ে থাকে তাহলে একটি বক্স পাবেন সে বক্সের লেখা থাকবে প্যারেন্ট অ্যাড্রেস ইজ দা পার্মানেন্ট এই অপশনটি সিলেক্ট করে দিবেন । আর যদি আপনি ভিন্ন আপনার পার্মানেন্ট এড্রেস যদি ভিন্ন হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ফরমটি পূরণ করে দিবেন ।
এরপর আরও একটি অপশন দেখতে পাবেন সেটি হল আপনার পাসপোর্ট অফিসের অঞ্চল সেখান থেকে আপনি বাংলাদেশ মিশন সিলেক্ট করে দেবেন ।
এরপর সেভ continue-এ বাটনে ক্লিক করুন ।
এরপর যে পেজটি চলে আসবে সেটি হল প্যারেন্টস অ্যাড্রেস আপনার বাবার তথ্য গুলি দিয়ে দিবেন আপনার বাবার ভোটার আইডি অনুসারে।
এরপর যে অপশন পাবেন সেটি হলো আপনার মায়ের ইনফরমেশন তো আপনার মায়ের ভোটার আইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন এর ইনফর্মেশন অনুসারে আপনি তথ্য গুলো সঠিকভাবে পূরণ করে নিবেন।
এরপরে যে অপশনটি চলে আসবে সেটি হলো আপনি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত তো সেই অপশনটি আপনি যেটি সেটি সিলেক্ট করে দিবেন ।
এরপরে যে পেজটি চলে আসবে সেটি হল ইমারজেন্সি কন্টাক্ট নাম্বার তো আপনি আপনার ইমারজেন্সি কন্টাক্ট নাম্বার দিয়ে দিবেন।
এর পরবর্তীতে যে পেইজে আপনি চলে আসবেন সেটি হল পাসপোর্ট অপশন এখান থেকে আপনি সিলেক্ট করে দেবেন যে আপনি কত পেজের পাসপোর্ট চান এবং সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত বছর হবে ।
এরপরে যে পেজটিতে আপনি চলে যাবেন সেটি হল ডেলিভারি অপশন । আসলে আপনি কি রেগুলার জেমস ডেলিভারি সিস্টেম রয়েছে সেই ভাবেই আপনি পাসপোর্ট নেবেন কিনা অথবা আপনি ইমারজেন্সি ভাবে পাসপোর্ট নেবেন কিনা এখানে দুটি অপশন পাবেন ।
আপনার যেটি প্রয়োজন সেটি সিলেক্ট করে দেবেন এবং আপনি সিলেক্ট করার পরে দেখবেন যে টোটাল আপনার কত টাকা ই পাসপোর্ট এর জন্য আসবে আপনি নিজেই দেখতে পাবেন ।
এরপর সেভ এন্ড কন্টিনিউ এই বাটনে ক্লিক করুন আপনি যদি পিছনের তথ্য গুলো ভালভাবে যাচাই করতে চান তাহলে প্রিভিয়াস পেজ আবার চলে গিয়ে আপনি আপনার সঠিক তথ্য গুলো যাচাই করে নিবেন ।
কারণ একবার যদি আপনি সাবমিট করে দেন আপনার তথ্য সে ক্ষেত্রে পুনরায় যদি কোন প্রকার এডিট করার দরকার হয় আসলে সেটি কিন্তু আর করতে অনেক ঝামেলা আপনাকে পোহাতে হবে আপনি নিজে থেকে আর করতে পারবেন না । অর্থাৎ আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে এবং তারপরও অনেক ধরনের সমস্যা আপনার সম্মুখীন হতে হতে পারে । তার জন্য অবশ্যই আপনার সঠিক তথ্য বারবার যাচাই করে তারপরে কেবলমাত্র আপনি সাবমিট করুন।
এরপর আপনি যখনই আপনার তথ্যগুলো সঠিক ভাবে দেখার পরে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিবেন।
এরপর আপনাকে যে পেজে নিয়ে আসা হবে সেখানে দেখতে পাবেন যে আপনি অনলাইনে পেমেন্ট করবেন না অফলাইনে পেমেন্ট করবেন । এখানেও দুটি অপশন আপনি পাবেন আপনার ইচ্ছা আপনি যদি অনলাইনে পেমেন্ট করতে চান সে ক্ষেত্রে অনলাইনে করতে পারবেন অথবা আপনি অফলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন।
আপনি যখন কন্টিনুয়ে বাটনে ক্লিক করবেন তারপর যে পেজ এ নিয়ে যাবে আপনাকে সেখানে আপনাকে সিদুয়াল এপারমেন্ট এমন একটি পেজ আপনাকে দেখাবে। আসলে সিডুয়েল যে পেজটি থাকবে সেখানে মূলত আপনি ছবি তুলতে কত তারিখে আসলে যেতে চান সেই অপশনটি সিলেক্ট করা দেওয়ার জন্যই আসলেই পেজটি । তারপর আপনি যখন সিডিউল বাটনে ক্লিক করবেন আপনাকে একটি ক্যালেন্ডারের মত বিশ্ব করবে সেখান থেকে আপনি আপনার তারিখটি সিলেক্ট করে দিবেন।
এর পরে আপনি আপনার প্রেম সামারি এই অপশনে ক্লিক করে আপনার আবেদন ফরম থেকে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন ।
এবং সেই প্রিন্ট কপি দেই আপনি দেখতে পাবেন আপনার ওই আবেদন ফরমের সাথে আপনার কি কি সংযুক্ত করতে হবে তো সেগুলো নিয়ে অবশ্যই পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করবেন।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এই পোস্টটি আশাকরি আপনাদের একটু হলেও কাজে আসবে । এরপরও আপনাদের বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য নিচের এই লিঙ্কটি ব্যবহার করুন ।
এটি হলো বাংলাদেশ সরকারের ই পাসপোর্ট অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এর মেইন ওয়েবসাইট অবশ্যই একটা কথা বলে রাখি পাসপোর্ট করার জন্য অবশ্যই আপনার ভোটার আইডি অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এর কপি অনুসারে সঠিক তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট করবেন ।
কোন রকম কোন মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করবেন না তাহলে অবশ্যই ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদে পড়তে যাবেন সঠিক তথ্য ব্যবহার করুন নিশ্চিন্তে বিদেশ ভ্রমন করুন।